সতর্ক হোন যে কোনো সময় হানা দিতে পারে আপনার জীবনে
ভারতীয় মহিলারা অফিস সামলে, ঘরের কাজ করে নিজের দিকে তাকান না খুব একটা। যেটুকু যত্ন তাঁদের দরকার, সেটুকুতেও থেকে যায় খামতি। ইদানীং মানুষের গড় আয়ু অনেক বেড়েছে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ে। আর এই কারণেই ইদানীং স্তন ক্যানসারও বাড়ছে।
দেরিতে বিয়ে বা বিয়ে না করা কিংবা সন্তান না হওয়া স্তন ক্যানসার ডেকে আনতে পারে। অল্প বয়সে মেনার্কি অর্থাৎ পিরিয়ড শুরু হওয়া এবং বেশি বয়সে মেনোপজ হলে দীর্ঘ দিন ইস্ট্রোজেনের সঙ্গে সহবাস করতে হয়। ইস্ট্রোজেন ক্যানসারের রিস্ক বাড়ায়। সন্তানকে ব্রেস্ট ফিডিং না করালেও ক্যানসারের ঝুঁকি থাকে।
বংশে এর আগে কোনও মহিলার ব্রেস্ট বা ওভারি ক্যানসার থাকলে ঝুঁকি বেশি। বিএআরসিএ ১, ও বিএআরসি ২, জিন থাকলে ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক বেশি।
প্রতি দিন স্নানের সময় স্তন ধরে যাচাই করতে হবে কোথাও কোনও লাম্প তৈরি হচ্ছে কি না। ব্যথাহীন লাম্পই বেশি মারাত্মক।
ব্রেস্ট লাম্পগুলি অনেক সময় আন্ডার আর্ম বা কলার বোনের তলায় দেখা যায়। স্তনবৃন্তের আশপাশেও এই ধরনের লাম্প থাকে, যেগুলি টিপলে শক্ত লাগে এবং অবস্থান পরিবর্তন করে না।
ব্রেস্ট ফিডিং করাচ্ছেন না, অথচ স্তনবৃন্ত থেকে অল্প অল্প দুধের মতো জলীয় পদার্থ ক্ষরিত হচ্ছে দেখলে সচেতন হোন।
অন্য কোনও অসুখ ছাড়াই কাঁধ এবং ঘাড়ে ব্যথা হলেও সাবধান। এগুলি ব্রেস্ট ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে, কারণ এই ক্যানসার স্তন থেকে খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে শরীরের এই অংশগুলিতে।
স্তনে কোনও রকম র্যাশ ছাড়াই চুলকানির অনুভূতি এলে চিকিৎসককে জানান।
স্তনে বিকৃতি বা ফোলা ভাব, স্তন লালচে হয়ে যাওয়া, স্তনে হাত দিলে ব্যথা লাগা এই রোগের লক্ষণ। তবে পিরিয়ডের আগে অনেকের স্তন ভারী হয় ও ব্যথা হয়। এতে ভয়ের কিছু নেই।
স্তনবৃন্ত হল স্তনের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশ। স্তনবৃন্ত স্পর্শ করলেও যদি তেমন কোনও অনুভূতি না হয় বা অনুভূতিহীন হয়ে যায় তবে তা ব্রেস্ট ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা খুবই বেশি।
স্তনের উপরের ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়াও ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ।
রাতে শোওয়ার সময় স্তনে ব্যথা বা অন্তর্বাস পরে থাকার সময় ঘর্ষণ বা ছড়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি হলে চিকিৎসকের শরণ নিন।
স্তন ক্যানসার নিয়ে মিথ
অনেকেই মনে করেন, স্তনবৃন্ত থেকে হলদেটে তরল নিঃসৃত হলে তবেই তা ক্যানসারের লক্ষণ। এ ধারণা ঠিক নয়। ব্রেস্ট ফি়ডিং করান না, এমন কারও স্তন থেকে দুধের মতো সাদা তরল নির্গত হলেও তা অসুখের বার্তাবাহক হতে পারে।
ব্যথাহীন লাম্পকে পাত্তা দেন না অনেকেই। অথচ, চিকিৎসকদের দাবি, ব্যথাহীন লাম্পই বেশি ভয়ের। বরং ব্যথাযুক্ত লাম্পে ম্যালিগন্যান্সি থাকে না।
আবার এও ঠিক, লাম্প মানেই কিন্তু ক্যানসার নয়। স্তনে উপস্থিত লাম্পের মাত্র ১০-১৫ শতাংশ লাম্প ম্যালিগন্যান্ট।
স্তন বাদ যাবে, এই ভয়ে অনেকেই চিকিৎসা করান না, অল্টারনেটিভ মেডিসিনে আস্থা রাখেন। খুব দরকার না পড়লে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয় না।
Post a Comment