রক্তদানের উপকারিতা।
রক্তদানের উপকারিতা।
মানসিক চাপ কমায় ৷
খারাপ লাগা অনুভূতিগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করে।
একাকীত্ব দূর করতে সাহায্য করে ।
ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধ করে।
ক্ষত দ্রুত নিরাময়ে সাহায্য করে।
নতুন নতুন রক্ত কোষ উৎপাদনকে উজ্জীবিত করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখে ।
হেমোক্রোমাটোসিস প্রতিহত করে।
ক্যালরি burn করতে (প্রতিবার রক্তদানে ৬৫০ ক্যালরি) ও অতিরিক্ত মেদ কমাতে সাহায্য করে।
অকাল বার্ধক্য রোধ করে।
ইতিবাচক মানসিকতার উন্নতি ঘটায়
হার্টের অসুখ হওয়ার ও হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমায়
রক্তে আয়রন বা লোহার উপস্থিতির আধিক্য রোধ করে এবং এর ফলে লিভার সিরোসিস,ডায়াবেটিস, হাইপোথাইরয়েডিসম প্রতিহত হয় ।
ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমায়
১. লিভার, ২. অন্ত্র, ৩. ফুসফুস, ৪. পাকস্থলী, ৫. খাদ্যনালী।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষমতা বাড়ায় ৷
বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা
১.নাড়ীর গতি পরীক্ষা, ২. রক্তচাপ পরীক্ষা, ৩.শরীরের তাপমাত্রা, ৪. হিমোগ্লোবিন লেভেলের পরীক্ষা।
রক্তদানের মাধ্যমে রক্তদাতা তাঁর শরীরে রক্ত বাহিত রোগের উপস্থিতির সম্বন্ধে জানতে পারে, যেমন এইচ. আই. ভি, হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, সিফিলিস ও ম্যালেরিয়া।
রক্তের গ্রুপ জানা যায় ।
প্রতিবার সরকারী ব্লাড সেন্টারে রক্তদান করলে একটি “ব্লাড ডোনার ক্রেডিট কার্ড” পাওয়া যায়, যেটির বিনিময়ে এক ইউনিট রক্ত যে কোন সরকারী ব্লাড সেন্টার থেকে এক বছরের মধ্যে বিনামূল্যে পাওয়া যায়। যদি কাঙ্খিত গ্রুপের রক্ত সেই ব্লাড সেন্টারে মজুত থাকে।
এই সকল সুবিধাগুলি নিয়মিত রক্তদাতার ক্ষেত্রে
রক্ত দান কোন সময়েই করা যায় না কোন কোন শারীরিক অবস্থায় ?
হাঁপানির সমস্যা থাকলে,
হাঁপানির সমস্যা ও তার ওষুধ খেলে,
হার্টের অপারেশন হলে,
ক্যান্সার সার্জারি,
বুকে ব্যথা, শ্বাস কষ্ট ও পা ফোলার লক্ষন ও যে কোন হার্টের অসুখ থাকলেই,
যে কোন রকম হার্টের ওষুধ খেলে,
খিঁচুনি এবং মৃগী রোগ থাকলে,
সিজোফ্রেনিয়া থাকলে,
থাইরয়েড থাকলে,
হেপাটাইটিস বি/সি শনাক্ত হয়ে থাকলে,
হেপাটাইটিসের ধরন বোঝা না গেলে,
এইচ.আই.ভি থাকলে বা সংক্রমণের অনুকুল জীবন যাপন করলে,
এইচ.আই.ভি সংক্রামিত ব্যক্তিদের জীবন সঙ্গী/সঙ্গিনী রা,
রুপান্তরিত লিঙ্গের মানুষজন, যৌন কর্মী, সমকামী মানুষজন,
সিফিলিস থাকলে,
গনোরিয়া থাকলে,
লেশম্যানিয়াসিস থাকলে,
কুষ্ঠ রোগ থাকলে,
কিডনির কোন দীর্ঘমেয়াদী রোগ থাকলে,
পলিসাইথেমিয়াভেরা থাকলে,
অস্বাভাবিক রক্তপাত বা রক্তপাতের প্রবনতা,
মারাত্মক অ্যালার্জি জনিত সমস্যা,
অন্য কোন রোগের প্রাবল্য থাকলে,
অঙ্গ বা টিস্যু প্রতিস্থাপন হলে,
রক্ত দান করার জন্য রক্তদাতার অতীতে যদি অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার নজির থাকে ও অন্তত দুবার তার কারনে আহত হওয়ার ঘটনা থাকলে ।
কোন অবস্থায় সাময়িক ভাবে
রক্ত দানে বিরত থাকতে হয় ?
বড়
ধরনের অপারেশন হলে এক বছর অবধি রক্তদান করা যায় না।
মামুলি
অপারেশন হলে ৬ মাস অবধি রক্তদান করা যায় না ।
দাঁত
তোলা বা দাঁতের অপারেশনের ক্ষেত্রে ৬ মাস অবধি রক্ত দেওয়া নিষেধ।
ঠাণ্ডা
লাগা, গলা ব্যথা, হাঁচি কাশি বা সাইনুসাইটিস এর ক্ষেত্রে সুস্থ হওয়া অবধি রক্ত দেওয়া
যাবে না ।
সন্তান
প্রসব পরবর্তী এক বছর অবধি রক্তদান করা যায় না।
গর্ভপাত
করালে ৬ মাস অবধি রক্তদান করা যায় না।
সন্তান
যতদিন মাতৃদুগ্ধ পান করে ততদিন সেই মা রক্তদান করতে পারবেন না ।
রজঃস্রাব
চলাকালীন রক্তদান করা যায় না।
অস্থিরতা,
মাথার যন্ত্রণা প্রভৃতি থাকলে যতক্ষণ না স্বাভাবিক পরিস্থিতি আসছে ততক্ষণ রক্তদান করা
যায় না ।
মাইগ্রেন
এর যন্ত্রণা খুব ঘন ঘন হলে বা এক সপ্তাহের মধ্যে আক্রান্ত হলে সেই পরিস্থিতিতে রক্তদান
করা যায় না ।
মানসিক চাঞ্চল্য, অবসাদ প্রভৃতি থাকলে রক্তদান করা
যায় না।
থাইরয়েড
উপস্থিতির সন্দেহজনক সম্ভাবনা দেখলে বা চিকিৎসার সম্ভাবনা শুরু থাকলে থাইরয়েড না থাকলেও
সাময়িকভাবে রক্তদান করা যায় না।
কোন
ব্যক্তি বা তার জীবন সঙ্গী রক্ত নিলে একবছর রক্তদান করতে পারবেন না।
হেপাটাইটিস-এ
অথবা হেপাটাইটিস-ই তে আক্রান্ত থাকলে এক বছর অবধি রক্তদান করা যায় না।
হেপাটাইটিস
আক্রান্ত রোগীর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হলে তার পর থেকে এক বছর অবধি রক্তদান করা যায়
না ।
নাক,
কান,শরীরের অংশ বেঁধানো বা অন্য কিছু করানো হলে এক বছর অবধি রক্তদান করা যায় না।
চিকেন
পক্স, হাম, মাম্পস হলে ভালো হওয়ার ২ সপ্তাহ পর রক্তদান করা যায়।
ম্যালেরিয়া
হলে সম্পূর্ণ ভালো হওয়ার তিন মাস পর রক্তদান করা যায়।
ডেঙ্গু
বা চিকেনগুনিয়া হলে সম্পূর্ণ ভালো হওয়ার ৬ মাস পর রক্তদান করা যায়।
ডেঙ্গু
বা চিকেনগুনিয়া প্রবণ এলাকা থেকে ফিরলে ৪ মাস নজরদারির মধ্যে থাকার পর এবং অসুস্থতার
কোন লক্ষন না থাকলে রক্তদান করা যায়।
জিকা
ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সম্পূর্ণ ভালো হওয়ার ৪ মাস পর রক্তদান করা যায়।
জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রবণ এলাকা থেকে ফিরলে ৪
মাস পর রক্তদান করা যায়।
টিবি
হলে সম্পূর্ণ সুস্থ ঘোষণার পর থেকে ২ বছর পর্যন্ত রক্তদান করা যায় না ।
চোখ
ওঠার ক্ষেত্রে যতদিন থাকবে ও যতদিন ওষুধ চলবে রক্তদান করা যাবে না।
অস্টিওমাইলাইটিস
থাকলে চিকিৎসায় সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পর থেকে ২ বছরের মধ্যে রক্তদান করা যায় না।
মারাত্মক
কিডনি সংক্রামণ থাকলে শেষ ওষুধ খাওয়ার পর বা সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পর থেকে ৬ মাসের
মধ্যে রক্তদান করা যায় না।
মারাত্মক
ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশন থাকলে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পর থেকে ২সপ্তাহের মধ্যে রক্তদান
করা যায়না।
ডাইরিয়া
হলে বিশেষত সাথে জ্বর থাকলে শেষ ওষুধ খাওয়ার পর বা সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পর থেকে
২ সপ্তাহের মধ্যে রক্তদান করা যায় না।
এণ্ডস্কপি
থাকলে ১২ মাস অবধি রক্তদান করা যায় না।
নন
লাইভ ভ্যাকসিন ও টক্সাইডের ক্ষেত্রে ১৪ দিন অবধি রক্তদান করা যায় না ।
লাইভ
ভ্যাকসিন এর ক্ষেত্রে ২৮ দিন অবধি রক্তদান করা যায় না।
টিটেনাস
প্রতিরোধক সিরাম, বিষ প্রতিরোধক সিরাম, ডিপথেরিয়া প্রতিরোধক সিরাম, গ্যাস গ্যাংগ্রিন
সিরাম নিলে ২৮ দিন অবধি রক্তদান করা যায় না।
জলাতঙ্ক
রোগের ও অন্যান্য পশুর কামড়ের টিকা নিলে এক বছর অবধি রক্তদান করা যায় না।
সোয়াইন
ফ্লু হলে ১৫ দিন অবধি রক্তদান করা যায় না ।
ডায়াবেটিসের
ওষুধ খেলে ৪ সপ্তাহের মধ্যে যদি ওষুধ পরিবর্তন হয় ।
প্রথম বার রক্তদান করলে ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়স পর্যন্তরক্তদান
করা যায় ।
নিয়মিত
রক্তদাতা হলে ১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত রক্তদান করা যায় ।
ন্যূনতম ৪৫ কিলোগ্রাম ওজন থাকলেই রক্তদান করা যেতে
পারে।
প্রতি
ডেসিলিটার রক্তে ১২.৫ গ্রাম হিমোগ্লোবিন থাকলে রক্তদান করা সম্ভব ।
নাড়ীর গতি মিনিটে ৫০ থেকে ১০০ থাকলে ও অনিয়মিত
না থাকলে রক্তদান করা যায়।
রক্তদান
করতে হলে সিস্টোলিক রক্তচাপ ১০০-১৪০ এবং ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৬০-৯০ হওয়া বাঞ্ছনীয়।
শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলে রক্তদান করা যায়
।
একজন
পুরুষ রক্তদাতা তিন মাস ব্যবধানে অর্থাৎ বছরে চারবার এবং মহিলা রক্তদাতা চার মাস ব্যবধানে
অর্থাৎ বছরে তিনবার রক্তদান করতে পারেন।
একজন
মানুষই একজন মানুষকে রক্তদান করে প্রাণ বাঁচাতে পারেন (যেহেতু রক্ত কৃত্রিম উপায়ে
তৈরি করা যায় না )
রক্তদানের
মাধ্যমে অন্যের জীবন বাঁচানোর সুযোগ পাওয়া যায় ।
সামাজিক
দায়বদ্ধতা পালনের উপযুক্ত মাধ্যম হল রক্তদান ।
আমাদের
শরীরে অহরহ রক্ত তৈরি হয় ।
সুরক্ষিত
রক্ত তাকেই বলে যে রক্তে কোন প্রকার ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, মাদক, ঔষধ ও রাসায়নিক
বস্তুর উপস্থিতি থাকে না, যাতে রক্ত গ্রহীতার কোন রক্তবাহিত রোগ হয় বা সেই রক্ত গ্রহন
বিপজ্জনক হয় ।
৪৫
কিলোগ্রাম বা তার বেশী ওজনের একজন ব্যক্তির কাছ থেকে ৩৫০ মিলিলিটার ও ৫৫ কিলোগ্রামও
তার বেশী ওজনের একজন ব্যক্তির কাছ থেকে ৪৫০ মিলিলিটার রক্ত সংগ্রহ করা হয়।
দান
করা রক্তের জলীয় অংশ শরীর মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় পূরণ করে নেয়, রক্ত কোষ পূরণ হতে সময়
নেয় ২১ দিন।
পৃথিবীতে
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রতি ৭ জন রোগীর মধ্যে ১ জনের রক্ত সঞ্চারনের প্রয়োজন হয়।
এবং প্রতি ২ সেকেন্ডে ১ জন মানুষের রক্ত সঞ্চারনের প্রয়োজন হয় ।
২
লক্ষ শিশুদের প্রাণ বাঁচায় বিরল গ্রুপের রক্ত।
সর্বাধিক
বেশী চাহিদা থাকে O গ্রুপের রক্তের।
রক্তদানের
৩৪ শতাংশ রক্ত কাজে লাগে রক্ত জনিত রোগ ও কর্কট (ক্যান্সার) রোগে।
রক্তদান
শুধুমাত্র গ্রহীতার প্রাণ রক্ষা করে না, রক্তদাতাকেও নিরাপদ রাখে।
ধনী
দেশগুলিতে রক্তদানের হার (১০০০ জনে ৩২.১ জন) তথাকথিত মধ্য ও নিম্নবিত্ত দেশগুলোর (১০০০
জনে ৭.৮ জন) থেকে বেশী।
বিশ্ব
স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে সমগ্র সক্ষম জন জাতির ১ শতাংশ মানুষ রক্তদান করলেই রক্তের
যোগান স্বাভাবিক থাকে।
বিশ্ব জুড়ে ৭৫ মিলিয়ন ইউনিট লোহিত রক্তকণিকা
(RBC) সঞ্চালিত হয় ।
ভারতবর্ষে ৫ থেকে ৫.৫ মিলিয়ন ইউনিট রক্ত সঞ্চালিত
হয়।
যেখানে
লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য প্রয়োজন ৯ থেকে ৯.৫ মিলিয়ন ইউনিট রক্ত।
বিশেষ করে গরমের মরশুমে ৪০% রক্তের ঘাটতি দেখা যায়।
বিশ্ব
জুড়ে লোহিত রক্তকণিকার সঞ্চালন এখন অধিক বিজ্ঞানসম্মত।
Post a Comment