Adsence

আর্থ্রাইটিস কি এবং কারণ

 বর্তমানে আর্থ্রাইটিস অত্যন্ত পরিচিত একটি অসুখ। জীবনযাত্রার সঙ্গে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গিয়েছে এই রোগ। সমাজের আর্থ-সামাজিক বোঝা হিসেবে এই রোগ ক্রমবর্ধমান হচ্ছে। মূলত একটা বয়সের পর যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন এই অসুখে। মূলত ৬০ বছর বয়স থেকে এই রোগের প্রকোপ বাড়লেও এখনও অনেক ৩০ বছর বয়সীও আক্রান্ত হচ্ছেন আর্থ্রাইটিসে। কিছুদিন আগেই জুভেনাইল আর্থ্রাইটিস নিয়ে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে শৈশবকেও কী ভাবে গ্রাস করছে আথ্রাইটিস। এখনও পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় ৩ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত।



আর্থ্রাইটিসের যে লক্ষণ গুলোর সঙ্গে আমরা সকলেই পরিচিত

আর্থ্রাইটিস হল মূলত বাতের ব্যথা। দুটো হাড়ের জয়েন্টে ব্যথা হলে তাই হল আর্থ্রাইটিসের প্রাথমিক লক্ষণ। পায়ের পাতা, হিপ জয়েন্ট, হাত, কোমরের জয়েন্টে যে ব্যথা হয় তা মূলত আর্থ্রাইটিসের কারণেই হয়। এবার এই আর্থ্রাইটিস অনেক রকমের হয়।

রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস এই আর্থ্রাইটিসে শরীরের গাঁটে গাঁটে ব্যথা হয়।

সোরিয়াটিক আর্থ্রাইটিস  যারা সোরিয়াটিক আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত তাঁদের ত্বক এবং গাঁটে জ্বালাপোড়া ব্যথা থাকে।

গাউট- মূলত ইউরিক অ্যাসিড অত্যধিক পরিমাণে বেড়ে গেলে এই সমস্যা হয়।

জুভেনাইল আর্থ্রাইটিস জুভেনাইল আর্থ্রাইটিস ১৬ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এটি সরাসরি কোশে্ আঘাত পরে। ফলে অনেকেরই হাঁটা চলার ক্ষমতা থাকে না। এমনকী অনেকেই ছোট বয়সে পঙ্গু হয়ে পড়ে।



রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের কারণ

কোনও কারণে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে, শরীরে একাধিকবার কোনও জটিল রোগ হলে এই আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। প্রথমদিকে কোনও নির্দিষ্ট একটি জায়গায় জয়েন্ট পেন থাকে। পরে তা ছড়িয়ে পড়তে থাকে শরীরের সর্বত্র। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস নানা ভাবে শরীরকে অক্ষম করে দেয়। পারিবারিক ইতিহাসে যদি কেউ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন সেখানে সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে পরবর্তী প্রজন্মে তা ছড়িয়ে পড়ার।

এছাড়াও আরও যা কিছু হতে পারে আর্থ্রাইটিসের কারণ…

অতিরিক্ত চিন্তা থেকেও হতে পারে আর্থ্রাইটিস। অনেকেই এমন আছেন, যাঁরা ভাবতে বসেন হয়তো তাঁদের শরীরে কোনও জটিল রোগ বাসা বেঁধেছে। এছাড়াও জয়েন্টে ব্যথা বা সামান্য ব্যথা থেকেই তাঁরা অনেক কিছু কল্পনা করে নেন। পরবর্তীতে এখান থেকেো কিন্তু হতে পারে আর্থ্রাইটিস।

পূর্বের কোনও জটিল আঘাতও হতে পারে আর্থ্রাইটিসের লক্ষণ। অনেক বছর আগে কার্টিলেজ ছিঁড়ে যাওয়া বা হাত-পা ভেহে গেলেও সেখান থেকে হতে পারে আর্থ্রাইটিস। কার্টিলেজ আমাদের জয়েন্টকে বিভিন্ন আঘাত থেকে রক্ষা করে। সেই কার্টিলেজ আঘাত পেরে পরবর্তীতে সমস্যা আসা স্বাভাবিক।

অতিরিক্ত ধূমপান করেন? সাবধান। সেখান থেকেও কিন্তু পরবর্তীতে হতে পারে আর্থ্রাইটিস। যাঁদের জীবনযাত্রা অনিয়ন্ত্রিত, অতিরিক্ত ধূমপান করেন পরবর্তীতে কিন্তু তাঁরা পড়তে পারেন জটিল সমস্যায়। কারণ নিয়মিত ধূমপান কমিয়য়ে দেয় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। ফলে তখন যে কোনও সংক্রমণই জেঁকে বসে।

যাঁরা শারীররিক ভাবে কর্মঠ নন, বেশি হাঁটাচবললা করেন না কিংবা প্রয়োজনীয় শরীরচর্চা টুকুও করেন না তাঁরাও কিন্তু হতে পারেন আর্থ্রাইটিসের শিকার।


আর্থরাইটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়ম করে শরীরচর্চা করতে হবে। তবে তার আগে জানতে হবে, কোন ব্যায়ামগুলি আর্থরাইটিসের ব্যথা কমাতে পারে।

পশ্চিমোত্তাসন

এই আসনটি করতে সবার প্রথমে চিৎ হয়ে শুয়ে দু’হাত মাথার দু’পাশে উপরের দিকে রাখুন। পা দু’টি একসঙ্গে জোড়া রাখুন। এ বার আস্তে আস্তে উঠে বসে সামনে ঝুঁকে দু’হাত দিয়ে দুই পায়ের বুড়ো আঙুল স্পর্শ করুন। কপাল দু’পায়ে ঠেকান। হাঁটু ভাঁজ না করে পেট ও বুক উরুতে ঠেকান। কিছু ক্ষণ এই ভঙ্গিতে থাকার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুন।



ত্রিকোণাসন

প্রথমে দু'টি পা ফাঁক করে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। হাত দু'টি দু’পাশে লম্বা করে দিন। এ বার বাঁ পাশে শরীরকে বেঁকিয়ে বাঁ হাত দিয়ে বাঁ পায়ের আঙুলকে স্পর্শ করুন। ডান হাতটি উপরের দিকে একেবারে সোজা করে রাখতে হবে। হাঁটু দু'টি ভাঙা চলবে না। দশ অবধি গুনুন। এ বার দু'টি হাত না ভেঙে সোজা হয়ে দাঁড়ান। একই ভাবে ডান হাত দিয়ে ডান পায়ের আঙুল স্পর্শ করুন। ৩ বার এই আসনটি করুন।



শলভাসন

উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। আপনার থুতনি মাটিতে স্পর্শ করান। পা দু'টি টানটান করে গোড়ালি দু'টিকে স্পর্শ করান। হাতের পাতা উল্টো করে উরুর নীচে রাখুন। এ বার প্রথমে বাঁ পা সোজা করে সামান্য উপরের দিকে তুলে ৫ অবধি গুনুন এবং নামিয়ে নিন। একই ভাবে ডান পা-টি উপরের দিকে তুলে নামিয়ে আনুন। এ বার দু'টি পা একসঙ্গে উপরের দিকে তুলুন। দশ অবধি গুনে পা দু'টি নীচে নামিয়ে আনুন। পর পর ৩ বার আসনটি করুন। স্নায়ু এবং মাংশপেশিকে সচল রাখতে সাহায্য করে এই আসন।






আর্থ্রাইটিসে ভুগলে এই ৮টি খাবার ভুলেও নয়

কিছু খাবার এবং পানীয় এড়ানো, প্রদাহজনক আর্থ্রাইটিস এবং অস্টিওআর্থারাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের লক্ষণগুলির তীব্রতা কমাতে পারে। 

আর্থ্রাইটিসে দই এড়িয়ে চলুন



দই খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়। কিন্তু যাদের বাতের রোগ (Arthritis)আছে তাদের দই খাওয়া উচিত নয়। আসলে, দইয়ে উপস্থিত ট্রান্স ফ্যাট ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়াতে কাজ করে। যা গাউটের একটি কারণ।

সাদা ভাত খেলে বাতের সমস্যা বাড়তে পারে




যখন শস্য সাদা আটা বা সাদা চালে প্রক্রিয়াজাত করা হয়, তখন বেশিরভাগ ফাইবার এবং পুষ্টি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। যেখানে সাদা ভাতে বেশি পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে। এর সেবনে ব্লাড সুগার বৃদ্ধি এবং শরীরে প্রদাহ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই, গাউট রোগীদের (Arthritis) সাদা ভাতের পরিবর্তে বাদামী চাল, কুইনোয়া এবং গোটা শস্য খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

জয়েন্টের ব্যথা বাড়ায় মিষ্টি




অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে শরীর আরও সাইটোকাইন তৈরি করে, যা প্রদাহজনক প্রোটিন। আর্থ্রাইটিসে (Arthritis) আক্রান্ত ব্যক্তিদের ইতিমধ্যেই উচ্চ মাত্রার সাইটোকাইন রয়েছে, তাই প্রদাহ বৃদ্ধি তাদের খারাপ বোধ করতে পারে।

অত্যধিক লবণ গেঁটেবাতের পক্ষে খারাপ




আপনার শরীরের সোডিয়াম প্রয়োজন। লবণ সোডিয়ামের প্রধান উৎস। কিন্তু এটি অত্যধিক খাওয়া একটি সমস্যা হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে উচ্চ লবণ গ্রহণের সঙ্গে প্রদাহ বৃদ্ধি এবং রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

বাতের ব্যথায় আলু খাবেন না




গাউট রোগীদের আলু খাওয়া উচিত নয়। জয়েন্টে ব্যথা ও ফোলা বাড়াতে আলু কাজ করে।

বাতের ব্যথায় দুধ খাওয়া উচিত নয়

হিপ ট্রান্সপ্লান্টের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায় বাত রোগে দুধ খাওয়া রোগীদের। এমন পরিস্থিতিতে বাতের রোগীদের দুধ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।


বাতের ব্যথায় রেড মিট খাওয়া উচিত নয়


লাল মাংস সাদা মাংস বা উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিনের তুলনায় বিশেষ করে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি। এই ক্ষেত্রে, লাল মাংসের ব্যবহার প্রদাহের মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত, যা জয়েন্ট ফুলে যেতে পারে এবং আর্থ্রাইটিসের (Arthritis) লক্ষণগুলিকে আরও খারাপ করতে পারে।

ডিসক্লেইমার: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, আরও বিস্তারিত জানতে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।


কোন মন্তব্য নেই

If you have any question, Please let us Know

Blogger দ্বারা পরিচালিত.