Adsence

কিডনিতে পাথর হয়েছে বুঝবেন কীভাবে ? কি করবেন

কিডনিতে পাথর কেন হয়? ক্যালসিয়াম, অক্সালেট এবং ইউরিক অ্যাসিডের মতো বর্জ্য পদার্থ শরীর থেকে বের হয়ে স্ফটিক অর্থাৎ ছোট পাথরের আকার ধারণ করতে সক্ষম না হলে কিডনিতে পাথর তৈরি হয়। এর পর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বড় হতে থাকে।

কিডনিতে পাথর অতিপরিচিত একটি রোগ, মোটামুটি সকলেই এই রোগ সম্পর্কে জানেন। ডাক্তারি ভাষায় একে Nephrolithiasis বা Urolithiasisও বলা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, জল কম খাওয়া থেকেই মূলত কিডনির যাবতীয় অসুখের সূত্রপাত। এছাড়াও ডায়াবিটিস থাকলে কিডনির সমস্যা আসে বলে মনে করা হয়। আমাদের শরীরে বৃক্ক জোড়ার সমস্যা হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়।



খারাপ খাদ্যাভ্যাস, শরীরের অতিরিক্ত ওজন, সাপ্লিমেন্ট এবং ওষুধ কিডনিতে পাথরের সৃষ্টি করে। কিডনিতে পাথর হলে মূত্রনালীর যে কোনও অংশকে প্রভাবিত করতে পারে। কখনও প্রস্রাবের রং হলুদ থেকে লালচে হয়ে গেলে, বমি বমি ভাব হলেও কিডিনির পাথরের লক্ষণ হতে পারে। তাই সমস্যা হলে আগেভাগেই সতর্ক হয়ে যেতে হবে। প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া শুরু করতে হবে। প্রস্রাব পেলে কোনওভাবেই তা চেপে রাখবেন না। 

কিডনিতে পাথর জমার কারণ:

কিডনিতে পাথর জমার বা তৈরি হওয়ার প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে কিছু কিছু বিষয় 
কিডনিতে পাথর তৈরির কারণ বলে বিবেচিত হয়। যেমন,...
• বারবার কিডনিতে ইনফেকশন হওয়া এবং এর জন্য যথাযথ চিকিত্সার ব্যবস্থা না করা।
• শরীরে জলের স্বল্পতা। কম জল খাওয়া। 
• শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রাতিরিক্ত আধিক্য।
• অত্যাধিক পরিমাণে দুধ, পনির বা দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার অভ্যাস।

কিডনিতে পাথর হওয়ার উপসর্গ:

• রক্তবর্ণের প্রসাব।
• বমি বমি ভাব। অনেক সময় বমিও হতে পারে।
কিডনির অবস্থানে (কোমরের পিছন দিকে) ব্যথা। এই ব্যথা তীব্র তবে সাধারণত খুব বেশি ক্ষণ 
স্থায়ী হয় না। ব্যথা কিডনির অবস্থান থেকে তলপেটেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

প্রচুর জল পান করুন




যারা প্রতিদিন ২ থেকে ২.৫ লিটার প্রস্রাব করেন তাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা ৫০% কম। এর জন্য প্রতিদিন প্রায় ২ লিটার জল পান করতে হবে।

বেশি করে ক্যালশিয়াম খান




ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে। দই, সয়া পণ্য, মটরশুটি, মসুর ডাল এবং বীজ ক্যালশিয়ামের ভালো উৎস বলে মনে করা হয়। ক্যালশিয়াম অন্ত্রে অক্সালেটকে আবদ্ধ করে কাজ করে। যার ফলে প্রস্রাবে এর পরিমাণ হ্রাস পায়।

লেবু হল মহাষৌধি




কিডনির পাথর এড়াতে লেবুর রস পান করা উচিত। এতে উপস্থিত সাইট্রেট বা সাইট্রিক অ্যাসিড ক্যালশিয়াম তৈরি করতে সাহায্য করে এবং পাথর রোধ করে। প্রতিদিন আধ কাপ লেবুর রস জলে মিশিয়ে পান করুন। দুটো লেবুর রস পান করলে প্রস্রাবের সাইট্রেটের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।

সোডিয়াম এড়ান




সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়। সোডিয়াম প্রস্রাবের মধ্যে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বাড়ায়। তাই দিনে ২,৩০০ মিলিগ্রামের বেশি সোডিয়াম খাওয়া উচিত নয়।

প্রাণীজ প্রোটিন এড়িয়ে চলুন





মাংস, ডিম এবং সামুদ্রিক খাবারের প্রোটিনকে প্রাণীজ প্রোটিন বলা হয়। এগুলো খেলে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই এমন ধরনের প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

চিকিত্সা:


কিডনির অবস্থানে ব্যথা এবং রক্তবর্ণের প্রসাব হলে চিকিত্সকরা 
সাধারণত দুটো সম্ভাবনার কথা চিন্তা করেন। একটি হল কিডনির 
ইনফেকশন, অন্যটি কিডনিতে পাথর। তাই কিডনির এক্সরে, 
আলট্রা সনোগ্রাম এবং প্রসাবের নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই 
উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কখনও পর্যাপ্ত পরিমাণে জল আর 
যথাযথ ওষুধ খেলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে 
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে অস্ত্রপচারই একমাত্র উপায়।


Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য। এটি কোনওভাবেই কোনও ওষুধ বা চিকিৎসার বিকল্প হতে পারে না। আরও বিস্তারিত জানার জন্য সর্বদা আপনার ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।














কোন মন্তব্য নেই

If you have any question, Please let us Know

Blogger দ্বারা পরিচালিত.