Adsence

‘ইউরিক এসিড’ কেন বাড়ে, বাড়লে কী করণীয় ?

এখন প্রায় প্রতি ঘরে ঘরেই ইউরিক অ্যাসিডের (Uric Acid) সমস্যা। আমাদের জীবনযাত্রাই (Lifestyle) এই রোগ ডেকে আনে। এক্ষেত্রে শুধু হাতে-পায়ে ব্যথা নয়, ইউরিক অ্যাসিড ডেকে আনতে পারে এই রোগগুলিও (Disease)। জেনে নেওয়া যাক।


ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে কেন?


ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির সমস্যা হল মেটাবলিক ডিজঅর্ডার। অর্থাৎ ইউরিক অ্যাসিড হল বিপাকজনিত সমস্যা। এক্ষেত্রে আমাদের ভুল জীবনযাপন (Lifestyle) ও খাদ্যাভ্যাস (Diet) এই রোগের ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি দায়ী থাকে।



৪০ বছরের পর এমন সমস্যা হয়। তবে অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস, প্রোটিনের আধিক্য, মদ্যপানের জন্য এখন অল্পবয়সিদের মধ্যেও এর প্রবণতা বাড়ছে। অনেকেই তাড়াতাড়ি ওজন কমাতে কার্বোহাইড্রেট বাদ দিয়ে প্রোটিন বেশি খান। সেখান থেকেই সমস্যার সূত্রপাত। মেটাবলিক ডিসঅর্ডারের জন্য শরীরের বিভিন্ন জয়েন্ট ইউরিক অ্যাসিডের ক্যালসিফিকেশনহয়, ফলে ইনফ্লেমেশন হয়ে ফুলে যায়। মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা বেশি। মহিলাদের শরীরের ইস্ট্রোজেন হরমোন ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

কী কী সমস্যা?


শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে তা অস্থিসন্ধিতে ক্রিস্টাল হিসাবে জমে। এই ক্রিস্টাল জমার কারণে অস্থিসন্ধি ফুলে উঠে লাল হয়ে যায়। এক্ষেত্রে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। যেই জায়গাই এই সমস্যা হয় সেই জায়গাটি নাড়ানোও যায় না। এই সমস্যার নাম গাউট আর্থ্রাইটিস (Gout Arthritis)। ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় আক্রান্ত অধিকাংশ মানুষ এই সমস্যাতেই ভোগেন।

তবে আর্থ্রাইটিস ছাড়াও ইউরিক অ্যাসিডের আধিক্য কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করে দেয়। এক্ষেত্রে ইউরিক অ্যাসিড কিডনিতে জমে স্টোন হতে পারে। এছাড়াও কিডনিতে হতে পারে ইনফেকশন। অন্যদিকে লিভার ও হৃৎপিণ্ডেও এই অসুখ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এই রোগ নিয়ে সাবধান থাকতে হবে।


কী খাবেন আর কী খাবেন না?

    • ইউরিক অ্যাসিডের ডায়েট নিয়ে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকেই টমেটো খাওয়া ছেড়ে দেন। রান্নায় টমেটো, পিঁয়াজ খেতে পারেন তবে কাঁচা পিঁয়াজ বা টমেটো খাবেন না।
    • ভাত, রুটি, চিঁড়ে, মুড়ি, ভুট্টা খেতে পারেন। পালং, ফুলকপি, বাঁধাকপি অল্প খাবেন।
    • বীজ আছে এরকম সবজিও খেতে পারেন, পরিমাণ কম। তৈলাক্ত নয় এমন মাছ খান।
    • ইলিশে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। বর্ষাকালে এক-দু’দিন ইলিশ খেলে সমস্যা নেই।
    • সব ফল খেতে পারেন। তবে মিক্সড ফ্রুটের বদলে সারাদিনে যে কোনও একটা ফল খান। ড্রাই ফ্রুটস চলবে।
    • ২০০-২৫০ এম.এল.-এর বেশি দুধ খাবেন না। দই, ছানা খেতে পারেন।
    • খাবারের তালিকা থেকে প্রোটিনের পরিমাণ কমান। ৬০ কেজি ওজনের কেউ সারাদিনে ৬০ গ্রামের বেশি প্রোটিন খাবেন না।
    • ডাল বা ডাল থেকে তৈরি জিনিস, রাজমা, সয়াবীন খাদ্যতালিকা থেকে সরিয়ে রাখুন।
      ডিমের সাদা অংশই খেতে পারেন।
    • চিকেন চলবে। মাটন, মাটনের মেটে, চিংড়ি খাবেন না।
    • অক্সালেট জাতীয় স্টোনের সমস্যা থাকলে দুধ বা দুগ্ধজাতীয় কিছু খাবেন না।
    • ফলের রস খাবেন না। কারণ ফ্রুকটোজ ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।


সম্ভাব্য ডায়েট চার্ট –
ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, ডিনার মিলিয়ে মোট ক্যালোরি ১৬০০ ক্যালোরি যুক্ত খাবার খাবেন।
প্রোটিন = ৬০ গ্রামের বেশি নয়।
ফ্যাট = ৪৫ গ্রামের মধ্যে।



সাধারণ ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কি?

শরীর পিউরিনযুক্ত পদার্থগুলিকে ভেঙে ফেলার সাথে সাথে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়। শরীর দ্বারা প্রাকৃতিকভাবে উত্পাদিত হওয়ার পাশাপাশি, কিছু খাবার এবং পানীয়তেও পিউরিন পাওয়া যায়। রেড মিট, অর্গান মিট এবং অ্যাঙ্কোভিস, ঝিনুক, সার্ডিন, স্ক্যালপস, ট্রাউট এবং টুনা সহ কিছু ধরণের সামুদ্রিক খাবার হল পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার। রক্তে কিছু ইউরিক এসিড থাকা স্বাভাবিক। তবে, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা উপরে বা নীচে স্বাস্থ্যকরস্বাভাবিক ইউরিক অ্যাসিড স্তর পরিসীমা চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে।

নীচে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা দেওয়া হল:

ইউরিক অ্যাসিড স্তর

পুরুষ

মহিলারা

কম

2.5 mg/dL এর নিচে1.5 mg/dL এর নিচে

স্বাভাবিক

2.5â7.0 mg/dL

1.5â6.0 mg/dL

উচ্চ

7.0 মিলিগ্রাম/এর উপরে

6.0 mg/dL এর উপরে

মহিলাদের মধ্যে ইউরিক অ্যাসিডের স্বাভাবিক পরিসর

ইউরিক অ্যাসিড স্বাভাবিক মানমহিলাদের মধ্যে সাধারণত 1.5 থেকে 6.0 mg/dl এর মধ্যে থাকে, নিম্ন মাত্রা 1.5 mg/dl এর নিচে এবং উচ্চ মাত্রা 6.0 mg/dl এর উপরে।

পুরুষদের মধ্যে ইউরিক অ্যাসিডের স্বাভাবিক পরিসর

পুরুষদের সাধারণত আছেইউরিক অ্যাসিড স্বাভাবিক পরিসীমা2.5 এবং 7.0 mg/dl-এর মধ্যে, নিম্ন মাত্রা 2.5 mg/dl এবং উচ্চ মাত্রা 7.0 mg/dl-এর বেশি।





কোন মন্তব্য নেই

If you have any question, Please let us Know

Blogger দ্বারা পরিচালিত.