সিম কার্ডে নতুন নিয়ম জারি হচ্ছে এপ্রিল থেকে, কেন এই বদল? কী কী খেয়াল রাখতে হবে?
ভুয়ো সিমের জালে হয়রানি বাড়ছে। সিম কার্ড নিয়ে সাইবার প্রতারণাও বেড়ে চলেছে দেশে। তাই এ বছর এপ্রিল থেকে সিম বিক্রি করার ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম জারি করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর কেনার ক্ষেত্রেও কিছু জিনিস খেয়াল রাখার কথা বলা হয়েছে। নতুন নিয়ম চালু করার সিদ্ধান্তের কথা আগেই জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের টেলিযোগাযোগ বিভাগ। খবর, ১ এপ্রিল থেকেই নতুন নিয়ম কার্যকর হবে। কী এই নিয়ম, কেন হচ্ছে এমন বদল, তা জেনে নেওয়া যাক।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সিম কার্ড বিক্রেতা বা ডিলারদের এখন থেকে টেলি সংস্থাগুলির সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে। দেশের সব জায়গাতেই তা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। সিম নিয়ে চলা অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত হওয়া থেকে বিক্রেতাদের বিরত রাখতেই এই সিদ্ধান্ত। সিম বিক্রি করতে হলে সরকারি খাতায় নাম নথিভুক্ত করতেই হবে অর্থাৎ ‘রেজিস্ট্রেশন’ একান্ত জরুরি।
সেটি না করলে সিম বিক্রি করা যাবে না। চুক্তি ভেঙে সিম কার্ড ডিলারেরা যদি অবৈধ কাজে জড়িয়ে পড়েন, তা হলে জরিমানাও করা হবে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সিম বিক্রেতাদের নিজেদের বিষয়ে বিশদ তথ্য স্থানীয় পুলিশের কাছেও জমা দিতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের সময়সীমা ৩১ মার্চ অবধি ধার্য করা হয়েছে। এই নির্দেশিকা না মানলে সিম বিক্রি করা যাবে না।
সিম কেনার ক্ষেত্রেও কিছু জিনিস মানতে হবে।
নতুন সিম কার্ড কেনার জন্য বা বর্তমান নম্বরে একটি নতুন সিমের আবেদন করার জন্য ‘ডেমোগ্রাফি’র বিবরণ দেওয়া বাধ্যতামূলক। ক্রেতার আধার কার্ডের কিউআর কোড স্ক্যান করে তাঁর সম্পর্কে বিশদ বিবরণ নেওয়া হবে। আরও একটি জিনিস খেয়াল করতে হবে। যদি কোনও বিক্রেতা আধার কার্ডের তথ্য বা বায়োমেট্রিক বার বার দিতে বলে, তা হলে সাবধান হবেন। নিজের নাম, ঠিকানা, ইমেল আইডি প্রয়োজন ছাড়া জানাবেন না।
সিম কার্ড নিয়ে সাইবার জালিয়াতি বেড়েই চলেছে। গ্রাহকদের থেকে নথি হাতিয়ে বা ভুয়ো নথি দিয়ে মোবাইলের সিমের সংযোগ নেওয়ার কাজ করেন অনেকে। সেই ভুয়ো বা জাল সিম পৌঁছে যাচ্ছে অপরাধীচক্রের হাতে। সন্দেহ করা হয়েছে, সিমের পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার কর্মী বা প্রতিনিধিদের একাংশই এই চক্রে জড়িত।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে সতর্ক নন। ফলে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, কেউ সিম কার্ড কেনার জন্য তাঁর আধার কার্ড নিয়ে এলে সেই কার্ডের ছবি তুলে রাখা হচ্ছে। সেই ছবি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে প্রতারকদের কাছে। তা দিয়েই তোলা হচ্ছে প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম কার্ড। ডুপ্লিকেট সিমও বার করে নেওয়া হচ্ছে সহজে।
এক একটি ছবির সঙ্গে ইচ্ছেমতো নাম-ঠিকানা বসিয়ে হাজার হাজার ভুয়ো আধার কার্ড বানানো হচ্ছে। আসল ব্যক্তি যত ক্ষণে বুঝতে পারছেন, তত ক্ষণে ওই নম্বর দিয়েই নানা অপরাধমূলক কাজ হয়ে যাচ্ছে। এমন প্রতারণা থেকে বাঁচতেই নতুন নিয়ম জারি করা হচ্ছে।
Post a Comment