হোয়াট্‌সঅ্যাপে নয়া ফাঁদ ‘ঘোস্ট-পেয়ারিং’, কিছু বুঝে ওঠার আগেই ফোনের সব তথ্য চলে যাবে হ্যাকারদের হাতে।



আপনাকে লুকিয়ে আপনারই হোয়াট্‌সঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট কেউ ব্যবহার করছে না তো? অজান্তেই আপনার ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাকারদের কাছে চলে গিয়েছে কি না, তা জানতেও পারবেন না। সাইবার অপরাধীরা হোয়াট্‌সঅ্যাপ হ্যাক করার নতুন পন্থা খুঁজে পেয়েছে। এর নাম ‘ঘোস্ট-পেয়ারিং’। 

কী এই ঘোস্ট-পেয়ারিং’?   ghostpairing


খুবই বিপজ্জনক সাইবার অপরাধ। এই পদ্ধতিতে আপনার ফোন হাতে না নিয়েই অপরাধীরা চোরাগোপ্তা পথে ঢুকে পড়বে আপনার অ্যাকাউন্টে। তার পরে আপনার অ্যাকাউন্টের প্রতিলিপি বা ‘ক্লোন’ তৈরি করে ফেলবে। তা দিয়েই শুধু আপনার হোয়াট্‌সঅ্যাপ প্রোফাইল নয়, সম্পূর্ণ ফোনকেই কব্জা করে ফেলবে। হোয়াট্‌সঅ্যাপ যে চুরি হয়েছে, তা জানতেই পারবেন না কোনও ভাবে। উল্টে অজান্তেই আপনার ফোন ব্যবহার করে অপরাধমূলক কাজ করতে শুরু করে দেবে হ্যাকারেরা। 

হোয়াট্‌সঅ্যাপের ‘লিঙ্কড ডিভাইস’ ফিচারটির অপব্যবহার করেই এই জালিয়াতি চালানো হচ্ছে। সাধারণত কম্পিউটার বা ল্যাপটপে হোয়াট্‌সঅ্যাপ খোলার জন্য কিউআর কোড স্ক্যান করা হয়। হ্যাকারেরা কৌশলে সেই কোড খোলার অনুমতি হাতিয়ে নেবে অপনার কাছ থেকে।


কী ভাবে?


প্রথমে আপনার খুবই পরিচিত কারও নম্বর থেকে ছবি পাঠানো হবে। আপনারই কোনও ছবি বা আপনার ফেসবুক বা অন্য প্রোফাইলে থাকা ছবি লিঙ্ক-সহ পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেই নম্বর থেকে জানানো হবে যে ছবিটি পাওয়া গিয়েছে, সেটি খুলে কোড ভেরিফাই করলেই আপনি ছবিটির বিষয়ে আরও বিশদে জানতে পারবেন। কৌতুহলবশত বা চেনা নম্বরটিকে বিশ্বাস করে সেই লিঙ্কটি খুললেই, একটি ভুয়ো ওয়েবপেজ খুলে যাবে। সেখানে ভেরিফিকেশন কোড চাওয়া হবে। আপনাকে ব্যক্তিগত তথ্য যেমন ফোন নম্বর, নাম বা ইমেল আইডি জানাতে বলা হবে। সেই তথ্য দিলেই একটি কোড পাঠানো হবে আপনাকে। সেই কোডটি ওয়েবপেজে লিখতে বলা হবে। সেটি করার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার ডিভাইসের নাগাল পেয়ে যাবে অপরাধীরা। এর পরে আপনার অ্যাকাউন্টেরই প্রতিলিপি বানিয়ে ফেলে তা ব্যবহার করতে শুরু করবে তারা। 


বাঁচার উপায় কী?


একাধিক ডিভাইসে হোয়াট্‌সঅ্যাপ ওয়েব খুলে রাখবেন না। ব্যবহারের পর প্রতিটি ডিভাইস থেকে অ্যাকাউন্ট লগ আউট করতে হবে।

কম্পিউটারে খোলা হোয়াট্‌সঅ্যাপ পেজটির ডান দিকে একেবারে কোণে তিনটি ডট থাকে। সেখানে ক্লিক করতে হবে। সেখানে রয়েছে ‘সেটিংস’ মেনু। সেখান থেকে ‘প্রাইভেসি’-তে গিয়ে ‘স্ক্রিন লক’ অপশনে ক্লিক করতে হবে। এ বার স্ক্রিনে একটি মেসেজ বক্স ফুটে উঠবে। সেখানে ক্লিক করে নিজের পছন্দ মতো পাসওয়ার্ড দিন। এ ভাবে স্ক্রিন লক করে রাখতে পারবেন।

আপনার ডিভাইসটি যে ভাবে প্যাটার্ন বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট লক করতে পারেন, একই ভাবে হোয়াট্‌সঅ্যাপ ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা ফেস আইডি দিয়ে লক করে রাখা যেতে পারে।

হোয়াট্‌সঅ্যাপে আসা কোনও ছবির সঙ্গে লিঙ্ক থাকলে তা খুলবেন না বা শেয়ার করবেন না। এর থেকে ম্যালঅয়্যার ঢুকে যেতে পারে ডিভাইসে। এক বার সেটি ঘটলে হোয়াট্‌সঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট তো বটেই, অজান্তে আপনার ফোনটিও অন্যের নজরদারিতে চলে যাবে।

 

কোন মন্তব্য নেই

If you have any question, Please let us Know

Blogger দ্বারা পরিচালিত.