Adsence

মুখে ছুলির দাগ, জেনে নিন প্রতিকার


 ছুলি, ছলম, ছইদ, ছৌদ, কদম—অঞ্চলভেদে আলাদা আলাদা নাম। এটি মূলত ত্বকের একটি সমস্যা। ছত্রাক সংক্রমণে সমস্যাটি হয়ে থাকে। ঘাড়, বুক, পিঠসহ শরীরের অন্যান্য খোলা অংশ এতে আক্রান্ত হয়। ত্বকের এসব জায়গায় সাদা বা বাদামি, গাঢ় বা হালকা ছোট ছোট দাগ দেখা যায়।


ছুলি কখন হয়


গ্রীষ্মের গরম আবহাওয়া ও বর্ষার স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় এ রোগের সংক্রমণ বেশি হয়। এ ছাড়া দীর্ঘদিন স্টেরয়েড ট্যাবলেট খেলে সমস্যাটি হতে পারে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে গেলেও এটি হয়। একই কক্ষে অনেক মানুষ থাকলে, একই জিনিসপত্র ব্যবহার করলে ও অপরিচ্ছন্ন থাকলে এ ছত্রাকের সংক্রমণ ঘটে।

ছুলি হলে কখনও কখনও ত্বকে জ্বালা বা চুলকানির মতো অস্বস্তি সৃষ্টি হতে পারে। মুখে, হাতে, কাঁধে বা পিঠের ত্বকে মেলানিনের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ছুলি সৃষ্টি হয়। চিকিৎসায় ছুলি নিরাময় সম্ভব। তবে এর চিকিত্সা বেশ ব্যায়বহুল। তবে বেশ কয়েকটি ঘরোয়া উপায় কাজে লাগিয়েও ছুলির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এই প্রাকৃতিক উপায়গুলি অত্যন্ত কার্যকরী 

১) লেবু-চিনির স্ক্রাব:



 এই পদ্ধতিতে ছুলির দাগ দ্রুত ফিকে হয়ে যায়। একটি লেবু মাঝখান থেকে কেটে নিয়ে অর্ধেক অংশের উপর আধা চামচ চিনি মাখিয়ে নিয়ে ত্বকের ছুলি আক্রান্ত অংশে লাগিয়ে আলতো করে মিনিট দশেক মালিশ করুন। তার পর জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। এ ভাবে সপ্তাহ দুয়েক নিয়মিত ব্যবহার করলে ছুলির সমস্যায় উপকৃত হবেন।

২) লেবুর রস দিয়ে মালিশ: 


ছুলি সারাতে লেবুর রস অত্যন্ত কার্যকরী! লেবুর রসে থাকা বিশেষ উপাদান ত্বকের গাঢ় দাগ দূর করতে সাহায্য করে। লেবুর রস নিংড়ে ছুলি আক্রান্ত অংশে লাগিয়ে ভাল করে মালিশ করুন। ১৫-২০ মিনিট পর সামান্য উষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন অন্তত দু’বার এ ভাবে মালিশ করলে দ্রুত ফল পাবেন।

৩) টমেটোর রস: 



প্রথমে একটি বড় ও পাকা টমেটো নিয়ে ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। তার পর টমেটোটিকে ভাল করে চটকে নিয়ে ত্বকের ছুলি আক্রান্ত অংশে মাখিয়ে দিন। এর পর ১৫-২০ মিনিট আলতো ভাবে মালিশ করুন। তারপর জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। এটি ব্যবহারের পরবর্তী কয়েক ঘণ্টা সাবান ব্যবহার করবেন না। সপ্তাহ দুয়েক দিনে অন্তত ২ বার এই পদ্ধতি কাজে লাগালে ছুলির দাগ অনেকটাই ফিকে হয়ে আসবে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়বে।

৪) পেঁয়াজ: 


পেঁয়াজে থাকা এক্সফলিয়েটিভ উপাদান ছুলি নিরাময়ের ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর। একটি বড় মাপের পেঁয়াজ মাঝখান থেকে কেটে নিয়ে অর্ধেক অংশটি নিয়ে শরীরের ছুলি আক্রান্ত অংশে দিনে অন্তত ২ বার মালিশ করুন। যত দিন পর্যন্ত না ছুলির রং ফ্যাকাশে হচ্ছে, তত দিন এটি ব্যবহার করুন।

৫) টক দই: 



টক দইয়ের সাহায্যেও ছুলির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। টক দইয়ের ল্যাক্টিক অ্যাসিড ছুলি দূর করতে খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। টাইরোসিনেজ নামের এনজাইম শরীরের মেলানিন ও অন্যান্য রঞ্জকের উপস্থিতির জন্য দায়ি। ল্যাক্টিক অ্যাসিড টাইরোসিনেজ এনজাইমের অতিরিক্ত উৎপাদনকে বাধা প্রদান করে। ফলে ত্বকের হাইপারপিগমেন্টেশন বাধাপ্রাপ্ত হয়। ৩ চামচ টক দই নিয়ে একটি কটন বলের সাহায্যে শরীরের ছুলি আক্রান্ত অংশে লাগান এবং অন্তত  মিনিট পনেরো রাখুন। তার পর সামান্য উষ্ণ জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। দিনে ৩-৪ বার এটি ব্যবহার করতে পারলে ছুলির সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে কমবে ব্রণ-ফুসকুড়ির সমস্যাও।

৬) নারকেল তেল : 



দিনে দুবার আক্রান্ত স্থানে নারকেল তেল মালিশ করলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে যত বেশি সময় সম্ভব তেল লাগিয়ে রাখা ভালো। রাতে ঘুমানোর আগে তেল লাগিয়ে ঘুমাতে পারেন।

৭) অ্যালোভেরা: 



ত্বকের নানাবিধ চিকিৎসা ও চর্চার মতো অ্যালোভেরা ছুলি দূর করতেও বেশ কার্যকর। অ্যালোভেরার জেলি বের করে আক্রান্ত স্থানে ভালোভাবে লাগিয়ে রাখুন। অন্তত ২০ মিনিট রেখে দেবেন। এরপর ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন।

৮) ভেজিটেবল মাস্ক: 


২ টুকরো শশা ও ২ টুকরো স্ট্রবেরি নিয়ে একসঙ্গে ভাল করে চটকে নিন। এ বার এর সঙ্গে অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি ছুলির উপরে লাগিয়ে স্বাভাবিক ভাবে শুকিয়ে নিন। মিশ্রণটি পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। ছুলির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এবং ত্বকের জেল্লা বাড়াতে সপ্তাহে অন্তত চারবার এই মাস্ক ব্যবহার করুন।

এ ছাড়া পেঁপে, বেগুন, আমন্ড তেল, কলা আর পুদিনার মাস্কও ছুলি দূর করার কাজে খুবই কার্যকরী।






কোন মন্তব্য নেই

If you have any question, Please let us Know

Blogger দ্বারা পরিচালিত.